১১ জন বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণ করে খুন করেছিল যে ব্যক্তি

 রোশু খাঁর নাম শুনলেই শিউরে ওঠে অনেকের শরীর। তার পরিচয় শুধুই একজন হত্যাকারী নয়, বরং এক নির্মম সিরিয়াল কিলার, যার কর্মকাণ্ড পুরো বাংলাদেশকে স্তম্ভিত করে তুলেছিল। রোশু খাঁর অপরাধের কাহিনী এক নারকীয় অধ্যায়, যা রোমাঞ্চকর থ্রিলার বা ভয়াবহ সিনেমার থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর।

রোশু খাঁর অপরাধের সূত্রপাত তার প্রেমঘটিত সম্পর্কের জটিলতা থেকে। তিনি সাধারণত তরুণীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন এবং তাদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। তার ভয়াবহ পরিকল্পনার শেষ ধাপ ছিল তাদের জীবন শেষ করে দেওয়া। একের পর এক নারীকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে, তিনি নিজের মধ্যে এক নির্মম সন্তুষ্টি খুঁজে পেতেন।

সর্বাধিক আলোচিত ঘটনা ছিল সোনিয়া নামে এক তরুণীর হত্যা। রোশু খাঁ তাকে প্রেমের নামে ধোঁকা দিয়ে মর্মান্তিকভাবে হত্যা করেন। তার এই নির্মম কাজটি যেমন ছিল নিষ্ঠুর, তেমনি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। রোশু খাঁ এই হত্যাকাণ্ডের পর আরও কয়েকটি মেয়েকে একই কৌশলে হত্যা করেন, যার মধ্যে অনেকেই ছিল তার প্রেমিকা বা প্রেমিকা হতে আগ্রহী। তার প্রত্যেকটি খুনই ছিল অত্যন্ত রক্তাক্ত এবং নির্মম।

তার অপরাধের সংখ্যা বাড়তে থাকে, কিন্তু তিনি নিজেকে আইনের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রাখার চেষ্টা করতেন। তার অপরাধমূলক কাজগুলো একসময় প্রকাশ্যে আসে, যখন পুলিশ তাকে খুঁজে বের করতে শুরু করে। রোশু খাঁর এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডগুলো গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, এবং পুরো দেশ আতঙ্কিত হয়ে ওঠে।

২০১০ সালে, পুলিশ অবশেষে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয় এবং তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। আদালতে রোশু খাঁর অপরাধের পেছনের নৃশংসতাগুলো যখন প্রকাশিত হতে থাকে, তখন বিচারক এবং উপস্থিত সবাই শিউরে উঠেছিলেন।

আদালত রোশু খাঁকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়, যা দেশের মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও ন্যায়বিচারের বোধ জাগিয়েছিল। এই ঘটনাটি বাংলাদেশে নারী নির্যাতন, প্রেমের নামে প্রতারণা এবং হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার একটি প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।

রোশু খাঁর ঘটনা শুধুমাত্র একটি অপরাধমূলক কাহিনী নয়, এটি বাংলাদেশের সামাজিক অবক্ষয়ের একটি চিত্রও তুলে ধরে। সমাজের নারীদের নিরাপত্তা, আইনের কঠোরতা, এবং অপরাধীদের প্রতি সমাজের প্রতিক্রিয়া – এই সব বিষয়কে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে তার এই নৃশংস ঘটনা।





Killer Roshu kha


Post a Comment

Previous Post Next Post